ঢাকামঙ্গলবার , ৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. উদ্যোক্তা
  6. কর্পোরেট
  7. কৃষি ও প্রকৃতি
  8. ক্যাম্পাস-ক্যারিয়ার
  9. খেলাধুলা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. তারুণ্য
  14. ধর্ম
  15. পর্যটন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

অবহেলা-অনিয়মে বাড়ছে আগুন

Sohel H
মার্চ ৯, ২০২৩ ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!


নিজস্ব প্রতিবেদক
পুরান ঢাকার নিমতলীতে ২০১০ সালে ভয়াবহ আগুনে মৃত্যু হয় নারী-শিশুসহ ১২৪ জন মানুষের। এর দুই বছর পর রাজধানীর অদূরে আশুলিয়ায় তৈরি পোশাক কারখানা তাজরীন ফ্যাশনে আগুন লেগে মারা যান ১১১ শ্রমিক। আর ২০১৯ পুরান ঢাকার চুরিহাট্টায় আগুন লেগে মারা যান ৭১ জন। এর ২ বছর পর ২০২১ সালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় আগুনে পুড়ে মারা যান ৪৮ শ্রমিক।
আর ২০২২ সালে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পর আগুনে মারা যান ৫১ জন। গত শুক্রবার একই এলাকার সীমা অক্সিজেন প্লান্টে বিস্ফোরণের পর আগুন লেগে ৭ জনের মৃত্যু খবর পাওয়া যায়। সর্বশেষ রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে একটি তিন তলা ভবনে বিস্ফোরণের পর অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয় তিনজনের। এসব অগ্নিকাণ্ডে আহত হয়েছেন বহু মানুষ। অনেকে দগ্ধ ও আহত হয়ে সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছেন। অনেকে অঙ্গহানির শিকার হয়ে যন্ত্রণাদায়ক জীবনযাপন করছেন বছরের পর বছর।
দেশে একের পর এক আগুন লাগার ঘটনা ঘটলেও টনক নড়ে না প্রশাসনের। অগ্নিকাণ্ডের পর ক্ষতিগ্রস্ত

ভবনগুলোতে অনিয়ম-অবহেলার বিষয়গুলো সামনে এলেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ফলে একের পর এক অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের হিসাবে গত বছর সারা দেশে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ২৪ হাজার ১০২টি। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা। এরমধ্যে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে শনাক্ত করেছেন ২ হাজার ২২৩টি ভবন। এর মধ্যে বিপজ্জনক (অতি ঝুঁকিপূর্ণ) ভবন ৬১৭টি। এসব ভবন শনাক্ত করা হলেও প্রশাসনিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোর ক্ষত না শুকাতেই গত শনিবার সীমা অক্সিজেন প্লান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়েছেন ৭ জন। দগ্ধ ও আহত হয়েছেন ৩০ জন। তাদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউটিনে ভর্তি করা হয়েছে। সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণের ঘটনার রেশ না কাটতেই পরের দিন রোববার রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় একটি ভবনে বিস্ফোরণের পর অগ্নিকাণ্ডে তাজা প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন। আহত হয়ে এখনও হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন অর্ধশতাধিক ব্যক্তি।
আহতদের অনেকেই পথচারী ছিলেন। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, নিমতলী থেকে শুরু করে বিএম ডিপোর ঘটনায় তদন্ত কমিটি অনিয়ম ও অবহেলার প্রমাণ পেলেও এবং ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করলেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে একের পর পৃষ্ঠা ১১ কলাম ৬
অবহেলা-অনিয়মে
শেষ পৃষ্ঠার পর
এক আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহাম্মেদ খান সময়ের আলোকে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী হাইরাইজ ভবনগুলো তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলে স্বচ্ছতা ফিরে আসবে। আমাদের দেশে অনেক হাইরাইজ ভবন রয়েছে যার কোনো অনুমোদনই নেই। নগরের ভবনগুলো সম্পূর্ণ তদন্তের দায়ভার সিটি করপোরেশনগুলোর। কারণ মন্ত্রণালয়গুলো শুধু প্ল্যান অনুমোদন করে। এর বাস্তবায়ন তদারক করার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের।
তিনি বলেন, নিমতলী থেকে বিএম কন্টেইনারে কী ঘটেছে তা সবারই জানা। সেখানেও অনিয়ম অবহেলার বিষয়গুলো উঠে এসেছে। সেখান থেকেই আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। কারণ ঘটনা যখন ঘটে তখন ভয়াবহতার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আগে নিজেদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা। তা না হলে একের পর এক ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
ফায়ার সার্ভিসের সাবেক এ মহাপরিচালক বলেন, বিদেশে অনেক উঁচুনিচু ভবন রয়েছে। সেখানে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে স্থানীয় পৌর মেয়র বা সিটি মেয়ররা তাদের নিজস্ব ইঞ্জিনিয়ারের মাধ্যমে তদন্ত করে থাকেন। তদন্তের ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে তার দায়ভার তৃতীয় পক্ষ দেখবে। আমাদের দেশেও কোনো ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মের মাধ্যমে ভবনগুলো তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হলে এবং সিটি করপোরেশনের মেয়ররা তা তদারক করলে ভবন নির্মাণ, ব্যবসার ধরনসহ সবকিছুতেই অনিয়ম ও অবহেলার বিষয়গুলো স্পষ্ট হবে। অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে সহজেই ব্যবস্থা নিতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, ফায়ার সার্ভিস যেসব ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সে ভবনগুলোর বিষয়েও সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরে ডিআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড প্ল্যানিং) হায়দার আলী খান সময়ের আলোকে বলেন, যে ভবন ও ইন্ডাস্ট্র্রিজ নির্মাণের একটি নীতিমালা রয়েছে। সে নীতিমালাগুলো অনুসরণ না করায় অগ্নিদুর্ঘটনা বাড়ছে। যারা ইন্ডাস্ট্রিজ, ভবন বা ফ্ল্যাট নির্মাণ করে থাকে তাদের অনেকেই অল্প কিছু টাকার জন্য অনুমোদন না নিয়েই তা নির্মাণ করে। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিসকে অবহিত না করেই অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণ করে ভয়াবহতার শিকার হয়। এমন অনেক ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকার অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সবার মধ্যে এমন সচেতনতা থাকতে হবে। এসব ক্যাম্পিংয়ের জন্য গণমাধ্যমের ভূমিকা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, নিমতলা থেকে বিএম ডিপো ও তাজরীন ফ্যাশনের মতো বড় ঘটনাগুলোতে অনিয়ম ও অবহেলা থাকায় পুলিশ ওই ঘটনায় মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। এখন থেকে মালিকদের আরও সচেতন হয়ে এবং নিয়মের মধ্যে থেকে ভবন নির্মাণের জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
সম্প্রতি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স ২০২২ সালের অগ্নিকাণ্ডের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, আবাসিক ভবনে আগুন লেগেছে বেশি। ওই বছর ২৪ হাজার ১০২ অগ্নিকাণ্ডের মধ্যে সাড়ে ৬ হাজার অগ্নিকাণ্ড হয় বাসাবাড়ি বা আবাসিক ভবনে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২২ সালের মোট ২৪ হাজার ১০২ অগ্নিকাণ্ডের মধ্যে বৈদ্যুতিক গোলযোগেই আগুন লাগে ৯ হাজার ২৭৫টি। শতকরা হিসাবে যা মোট অগ্নিকাণ্ডের ৩৮ দশমিক ৪৮ ভাগ। এর পরই অগ্নিকাণ্ডের বড় কারণ বিড়ি-সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরা, যা শতকরা হিসাবে ১৬ ভাগের বেশি। ইলেকট্রিক, গ্যাস ও মাটির চুলা থেকে প্রায় ১৪ ভাগ অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। ৩ দশমিক ৩০ ভাগ আগুন লেগেছে গ্যাস সরবরাহ লাইন থেকে। শিশুরা আগুন নিয়ে খেলতে গিয়ে আড়াই ভাগ অগ্নিকাণ্ড হয়েছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।