র্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড (Rangs Electronics Ltd.) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৮৪ সালের ২৯ মার্চ, ঢাকায়। এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আখতার হোসেন, যিনি র্যাংগস গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
আখতার হোসেন বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স শিল্পের বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি র্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের মাধ্যমে সনি (SONY) পণ্যের একমাত্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত পরিবেশক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তীতে “সনি-র্যাংগস” নামে পরিচিতি লাভ করে। বর্তমানে র্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স বাজারের একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত। তাদের নিজস্ব ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত পণ্য এবং সারা দেশে বিস্তৃত ডিলার ও সার্ভিস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তারা গ্রাহকদের সেবা প্রদান করে আসছে।
র্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের বর্তমান
পরিচালনা পর্ষদের
– সাচিমি হোসেন- ভাইস চেয়ারপার্সন প্রতিষ্ঠানের কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
– একরাম হোসেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি প্রতিষ্ঠানটির দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করেন এবং বিভিন্ন উদ্যোগের নেতৃত্ব দেন। – বিনাস হোসেন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক র্যাংগস গ্রুপের বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
র্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স খাতে একটি বিশ্বস্ত নাম হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। উচ্চমানের পণ্য সরবরাহ, নিজস্ব ফ্যাক্টরিতে উৎপাদন এবং গ্রাহকসেবায় উদ্ভাবনী চিন্তাধারার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি দেশের ঘরে ঘরে আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক হয়ে ওঠে। সনি, এলজি, কেলভিনেটর, ডেইউসহ আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের একমাত্র পরিবেশক হিসেবে র্যাংগস ক্রেতাদের দিয়েছে সর্বোত্তম প্রযুক্তি ও সেবা। নিরলস পরিশ্রম, অদম্য প্রচেষ্টা এবং সৎ ব্যবসায়িক নীতির ফলে আজ র্যাংগস ইলেকট্রনিক্স দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ডগুলোর অন্যতম। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে র্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড টিকে আছে পণ্যের গুণগত মান, উদ্ভাবনী প্রযুক্তি, নিরবচ্ছিন্ন কাস্টমার সাপোর্ট এবং বিস্তৃত সার্ভিস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে।
প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব ফ্যাক্টরিতে ফ্রিজসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করে, যার ফলে দাম ও কোয়ালিটির ভারসাম্য বজায় রাখতে সক্ষম। এছাড়া আন্তর্জাতিক মানের ব্র্যান্ডের এক্সক্লুসিভডিস্ট্রিবিউশন, গ্রাহক চাহিদাভিত্তিক অফার, এবং দীর্ঘমেয়াদি ওয়ারেন্টি সুবিধাও তাদের বাজারে এগিয়ে রাখে। সবশেষে, চার দশকের বেশি অভিজ্ঞতা এবং মানুষের বিশ্বাসই তাদের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।
র্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের বাজার ব্যবস্থাপনা কৌশল অত্যন্ত সুসংগঠিত ও গ্রাহককেন্দ্রিক। তাদের প্রধান কৌশলগুলো হলো:
১. ব্র্যান্ড ডাইভার্সিফিকেশন: আন্তর্জাতিক ও দেশীয়
উভয় ব্র্যান্ডের ইলেকট্রনিক্স পণ্য সরবরাহ করে বাজারের বিভিন্ন সেগমেন্ট কভার করা।
২. মূল্য নির্ধারণ কৌশল: প্রতিযোগিতামূলক মূল্য, কিস্তি সুবিধা ও ডিসকাউন্ট অফারের মাধ্যমে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা।
৩. বিপণন ও প্রচারণা: টিভি, সোশ্যাল মিডিয়া, বিলবোর্ড ও প্রমোশনাল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সর্বত্র উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
৪. ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেল: দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় বিস্তৃত শোরুম ও ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা।
৫. গ্রাহকসেবা: বিক্রয়োত্তর সেবা, দ্রুত সার্ভিস এবং ওয়ারেন্টি সুবিধা দিয়ে গ্রাহকের আস্থা অর্জন।
এই কৌশলগুলোর ফলে র্যাংগস দেশের
ইলেকট্রনিক্স বাজারে একটি নির্ভরযোগ্য ও প্রতিযোগিতামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তরুণ উদ্যোক্তারা ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায় আসতে চাইলে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলা উচিত:
১. বাজার গবেষণা করুন: কোন পণ্য বেশি চাহিদাসম্পন্ন, টার্গেট অডিয়েন্স কারা তা বুঝে পরিকল্পনা করুন।
২. ছোট পরিসরে শুরু করুন: শুরুতে বেশি ইনভেস্ট না করে সীমিত প্রোডাক্টে মনোযোগ দিন।
৩. ডিজিটাল উপস্থিতি গড়ে তুলুন। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে
বিক্রি শুরু করুন।
৪. সঠিক ব্র্যান্ড নির্বাচন করুন: মানসম্পন্ন ও নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ডের পণ্য বিক্রি করাই ভবিষ্যতের জন্য লাভজনক।
৫. বিক্রয়োত্তর সেবায় গুরুত্ব দিন: গ্রাহক সন্তুষ্টিই টিকিয়ে রাখার মূলমন্ত্র।
৬. নেটওয়ার্ক গড়ে তুলুন: অভিজ্ঞদের সাথে সংযুক্ত হোন, পরামর্শ নিন এবং বিজনেস ফোরামে যুক্ত থাকুন।
সততা, ধৈর্য ও প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার থাকলে এই খাতে অনেক সম্ভাবনা আছে তরুণদের জন্য বলে মনে করেন “সনি-র্যাংগস” এর কর্তা ব্যাক্তিরা।