কুমিল্লায় ঘূর্ণিঝড়ের তীব্র বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে ৬২টি ট্রান্সফরমার বিকল ও ৮৪টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গেছে বলে জানিয়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এবারের নিম্নচাপে ঝোড়ো হাওয়া ও ভারি বর্ষণের ফলে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে জেলাজুড়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয় শুরু হয়েছে। সেই বিপর্যয় রোববার (০১ জুন) পর্যন্ত কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি।
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১, ২, ৩ ও ৪-এর তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ে ৮৪টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে যায়। ট্রান্সফরমার বিকল হয়েছে ৬২টি এবং প্রায় সাড়ে ৪০০ স্থানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। এ ছাড়া দুই শতাধিক স্থানে খুঁটি হেলে যাওয়া, শতাধিক স্থানে ক্রস আর্ম ভাঙা, দেড় শতাধিক স্থানে ইনসুলেটর ও ৩ শতাধিক স্থানে মিটার ভেঙে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটেছে। এর মধ্যে প্রতিটি সমিতির ৩০ শতাংশ লাইনম্যান আন্দোলনে অংশ নিতে ঢাকায় যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত সংযোগ মেরামতে হিমশিম খাচ্ছে সমিতিগুলো।
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার শ্রীমন্তপুর গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর শনিবার রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ আসেনি। মোবাইল বন্ধ হয়ে গেছে আগের দিন। ফ্রিজ থেকে পানি বের হয়ে সব মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে।
কুমিল্লা মহানগরীসহ ১৭টি উপজেলা এবং পাশের দুটি জেলার আরও দুই উপজেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং পল্লী বিদ্যুতের চারটি সমিতি। তবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন কুমিল্লা মহানগরী এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ স্বাভাবিক আছে। ঘূর্ণিঝড়ে এ এলাকায় বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির কথা জানা যায়নি।
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিটি সমিতিতে ১০০-২০০ লাইনম্যান নিয়োজিত। কিন্তু আন্দোলন করতে এখন ঢাকায় আছে ৩০ ভাগ। তাই এই বিপর্যয়ের সময় লাইনম্যানের সংকটে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত লাইন সংস্কারে বহিরাগত লোকজন দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে।
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর মহাব্যবস্থাপক মো. আবু রায়হান জানান, ঘূর্ণিঝড়ে বৈদ্যুতিক লাইন অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে ঝড়ের রাত থেকেই আমাদের লোকজন কাজ করছে। বর্তমানে আমাদের সব লাইনই চালু আছে, তবে বিভিন্ন সেকশন বন্ধ থাকায় কিছু কিছু এলাকায় গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। দ্রুতই সেসব এলাকায় সমস্যার সমাধান করা হবে।