ঢাকারবিবার , ২২শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. উদ্যোক্তা
  6. কর্পোরেট
  7. কৃষি ও প্রকৃতি
  8. ক্যাম্পাস-ক্যারিয়ার
  9. খেলাধুলা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. তারুণ্য
  14. ধর্ম
  15. পর্যটন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

চামড়াশিল্পে অণুজীবের ব্যবহার

Md Abu Bakar Siddique
জুন ২২, ২০২৫ ৪:৫৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সারা বিশ্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত হিসেবে পরিচিত চামড়া শিল্প। তবে এই শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। সনাতন পদ্ধতিতে চামড়া প্রক্রিয়াকরণে ক্রোমিয়াম, সালফাইডের মতো বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া অন্যান্য ভারী ধাতুর ব্যবহার পরিবেশের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনে। এ সমস্যা সমাধানে অণুজীবের ব্যবহারের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা একটি বিপ্লবী পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন।অণুজীবনির্ভর প্রযুক্তি চামড়াশিল্পে বিশাল পরিবর্তন এনেছে। চামড়া প্রক্রিয়াকরণে এর কার্যকারিতা দেখা যায়। সাধারণত চামড়া প্রক্রিয়াকরণের জন্য চুন ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়। তবে বর্তমানে ব্যাসিলাস সাবটিলিস (Bacillus subtilis) নামের ব্যাকটেরিয়া ও বিভিন্ন ধরনের এনজাইম ব্যবহার করে চামড়া থেকে অপ্রয়োজনীয় প্রোটিন ও চর্বি অপসারণ করা হচ্ছে। এই জৈব পদ্ধতি কেবল পরিবেশবান্ধব নয়, বরং এটি চামড়ার গুণগত মানও বৃদ্ধি করে।ট্যানিং প্রক্রিয়ায় অণুজীবের ব্যবহার দিন দিন আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। প্রচলিত পদ্ধতিতে ক্রোমিয়াম ট্যানিং পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তবে বর্তমানে ট্রাইকোডার্মা রিসেই (Trichoderma reesei) ও অ্যাসপারজিলাস নাইজার (Aspergillus niger) নামের অণুজীব থেকে তৈরি এনজাইম ব্যবহার করে ক্রোমিয়ামমুক্ত ট্যানিং করা সম্ভব হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে তৈরি চামড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের কঠিন পরিবেশগত মানদণ্ডগুলোও পূরণ করতে পারে।

চামড়াশিল্পের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। এক্ষেত্রেও রয়েছে অণুজীবের অনেক বেশি ভূমিকা। সিউডোমোনাস অ্যারুজিনোসা (Pseudomonas aeruginosa) ও অ্যাসপারজিলাস নাইগার-এর মতো অণুজীব ক্ষতিকর ‘ক্রোমিয়াম-৬কে’ কম ক্ষতিকর ‘ক্রোমিয়াম-৩এ’ পরিবর্তন করতে পারে। এ ছাড়া চামড়াশিল্পের জৈববর্জ্য পচিয়ে উন্নতমানের জৈবসার তৈরির প্রযুক্তিও উদ্ভাবন করা হয়েছে।রং ও ফিনিশিং করার পদ্ধতিতে অণুজীবের ব্যবহার চামড়াশিল্পে নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। স্ট্রেপ্টোমাইসিস (Streptomyces) ও সিউডোমোনাস (Pseudomonas) প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া থেকে তৈরি হওয়া প্রাকৃতিক রং রাসায়নিক রঙের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই রংগুলো মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য পুরোপুরি নিরাপদ।বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এই প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ রাখতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট ও অন্যান্য বিভাগ পরিবেশের জন্য ভালো হয়, এমন পদ্ধতিতে চামড়া প্রক্রিয়াকরণের জন্য প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছে। এই প্রযুক্তি দেশের চামড়াশিল্পের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।তবে এই প্রযুক্তি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা আছে। প্রাথমিক খরচ ও উৎপাদন ব্যয় বেশি হওয়ার কারণে ছোট ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এই প্রযুক্তি গ্রহণ করা কঠিন হতে পারে। এ ছাড়া রাসায়নিকের ওপর নির্ভরশীল শিল্পকারখানায় নতুন পদ্ধতি গ্রহণে কিছুটা অনীহা দেখা যায়।

এই সমস্যা মোকাবিলা করতে সরকারি ও বেসরকারি উভয় স্তরে সম্মিলিত পদক্ষেপ নিতে হবে। গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা, শিল্প মালিকদের জন্য উৎসাহ প্রদান এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা- এই প্রযুক্তিকে জনপ্রিয় করতে সাহায্য করবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০৩০ সালের মধ্যে ক্রোমিয়ামবিহীন ট্যানিং বাধ্যতামূলক করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা এই প্রযুক্তির চাহিদা আরও বৃদ্ধি করবে।চামড়াশিল্পে অণুজীবের ব্যবহার শুধু পরিবেশ রক্ষায় নয়, এটি এই শিল্পের দীর্ঘস্থায়ী উন্নতি নিশ্চিত করবে। এই প্রযুক্তি চামড়াশিল্পকে নতুন অধ্যায়ে নিয়ে যাবে, যেখানে অর্থনৈতিক উন্নতি ও পরিবেশের সুরক্ষা একসঙ্গে সম্ভব। বিজ্ঞান, শিল্প ও নীতিনির্ধারকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এই পরিবর্তনকে দ্রুত করতে পারে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সবুজ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।