মা হওয়ার পর আলিয়া ভাটের জীবন যেন পুরোপুরি বদলে গেছে। তাঁর ভাষ্যে, ‘নিজেকে আর নিজেই চিনতে পারছি না।’ চলতি সপ্তাহেই কান চলচ্চিত্র উৎসবের লালগালিচায় হেঁটেছেন এই ভারতীয় অভিনেত্রী। ভারতীয় গণমাধ্যম ব্রুট ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে, মাতৃত্ব নিয়ে সবিস্তার কথা বলেছেন তিনি।
কানে অভিষেকের পর আলিয়া বলেন, ‘আমি যেন হারিয়ে গিয়েছি। মনে হচ্ছে, এই নতুন মানুষটা কে? আমি কে?’ ২০১২ সালে বলিউডে অভিষেকের পর প্রায় ১২ বছর পর গুরুত্বপূর্ণ এই আন্তর্জাতিক মঞ্চে (কান উৎসব) পা রাখলেন তিনি।
গুচির লেহেঙ্গা-অনুপ্রাণিত গাউন পরে লালগালিচায় হাজির হয়ে নজর কাড়েন আলিয়া। যদিও উৎসবের জৌলুশে মগ্ন ছিলেন, মনটা কিন্তু পড়ে ছিল দেশে—মেয়ে রাহা কাপুরের কাছে।
সাক্ষাৎকারে আলিয়া বলেন, মা হওয়ার পর তাঁর ভেতরের পরিবর্তন এতটাই গভীর যে সেটিকে ভাষায় বোঝানো কঠিন।
আলিয়া জানান, মা হওয়ার ফলে আরও সহানুভূতিশীল হয়ে উঠেছেন তিনি। ‘মনে হয় হৃদয়টা এখন পুরোপুরি খোলা। একধরনের সংবেদনশীলতা তৈরি হয়েছে, যেটা আগে কখনো অনুভব করিনি। আমি আর আগের সেই মানুষটা নেই। আর নিজে বদলে যাওয়ায় চিন্তাভাবনাও বদলে গেছে। আমি আগের মতো ভাবি না, এটাও একপ্রকার প্রাকৃতিক পরিবর্তন,’ বললেন তিনি।
আলিয়া জানান, মা হওয়ার পর নতুন মায়েদের সঙ্গে কোনো কথা না বলেও একধরনের বোঝাপড়া তৈরি হয়েছে। তাঁর ভাষ্যে, ‘আমি এখন অনেক সময় কোনো কথা না বলেও বুঝিয়ে দিতে পারি, আর তাঁরাও সেটা বুঝে ফেলেন।’
কানে এবার একাই গিয়েছিলেন আলিয়া, মেয়ে রাহা ছিল মুম্বাইয়ে। তবে মেয়েকে ছেড়ে গেলেও কখনো একা মনে হয়নি। ‘ওর ভাবনা, ওর অস্তিত্ব—সব সময় আমার সঙ্গে থাকে। এখন আমি নিজের কথা ভাবি না। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এটা। আমি এখন শুধু আমার মেয়েকে নিয়েই ভাবি, এরপর সবার কথা ভাবি। কারও কষ্ট বা কান্না, মনে হয় যেন আমার মেয়ের কষ্ট বা কান্না। পৃথিবীটাকে এখন আমি ওর চোখ দিয়ে দেখি,’ বলেন আলিয়া।
সাক্ষাৎকারে সিনেমা নিয়েও কথা বলেন আলিয়া। তাঁর মতে, ভারতীয় সিনেমার পরিধি এতটাই বিশাল যে সেটিকে প্রায় একটি মহাদেশ বললেই চলে। ‘আমাদের দেশে তো ভাষা, উপভাষা, সংস্কৃতি—সবই বদলে যায় প্রতি তিন কিলোমিটারে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি যখন পাওয়ার, তখনই আসবে। কিন্তু সেটা আমাদের কাজ বা সংস্কৃতি—সিনেমা, সংগীত, শিল্প—কোনোটাই বদলাবে না,’ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন তিনি।