নওগাঁর মহাদেবপুরে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার নওগাঁ ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি ও বাংলা ৫২ ডট কম এর নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক সুইট হোসেন এর উপর হামলা ও মারপিট সহ নগদ টাকা, ক্যামেরা ও চেন ছিনিয়ে নেওয়া ঘটনার মূল হোতা চকরাজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হায়দার আলী এখনও পলাতক রয়েছে। থানা পুলিশ তাকে খুঁজে পাচ্ছে না। এমন কি পলাতক থাকলেও তিনি স্কুল থেকে ছুটিও নেননি।
গত ৫ মার্চ এব্যাপারে প্রহৃত সাংবাদিক বাদি হয়ে মহাদেবপুর থানায় ৮ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করলে থানার অফিসার ইনচার্জ এর নের্তৃত্বে থানা পুলিশ ঐ রাতেই অভিযান পরিচালনা করে মামলার এজাহারভূক্ত ৩ জনকে আসামীকে গ্রেফতার পূর্বক পরের দিন বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে নওগাঁ জেল হাজতে প্রেরন করেন। বিজ্ঞ বিচারক এদের মধ্যে রবিউল ইসলাম নামে একজনকে জামিন দেন এবং অপর দু’ জন আব্দুস সাত্তার ও ইলিয়াস হোসেন এর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠান। এখনো তারা জেল – হাজতে রয়েছেন। পরের দিন এই মামলার অপর আসামীরা বিজ্ঞ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানালে বিজ্ঞ আদালতের বিচারক তাদের জামিন দেন। কিন্তু মামলার ১নং আসামী ও মূলহোতা শিক্ষক হায়দার আলী মাস্টার সংবাদ সংগ্রহ পর্যন্ত পলাতক রয়েছেন। সাংবাদিককে মারপিটের সময় স্থানীয়দের তোলা ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায় মারপিটের শিকার সাংবাদিককে সহ প্রধান শিক্ষককে মারপিট করছেন সহকারি শিক্ষক হায়দার আলী ও তার সন্ত্রাসী দল।
এব্যাপারে মহাদেবপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাফিয়া আকতার অপু জানান, শিক্ষক হায়দার আলী অফিস থেকে কোন ছুটি নেননি। মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন জানান, ১নং আসামীকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, চকরাজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন থেকেই একের পর এক ঘটনা ঘটেই আসছিলো।
তারই ধারাবাহীকতায় শিক্ষকদের মাঝেও দেখা দেয় বিরোধ এবং সর্বশেষ যৌন হয়রানী, কুপ্রস্তাব সহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও করেন সহকারি শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ সাবেক কমিটির সভাপতি তার পক্ষের লোকজন। এমনকি ঘটনাটি জাতীয় একটি পত্রিকায় (চটকদার হেডিং) ব্যবহার করে নিউজ প্রকাশের পরই
একাত্তর টিভি সরাসরি লাইভ ভিডিও প্রচার করেন ঘটনাটি নিয়ে। সম্পতি বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষিকা/শিক্ষক সহ সাবেক কমিটির সভাপতি ও তাদের পক্ষের আরো ৩৫-৩৬ জন সাক্ষরীত একটি অভিযোগ নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর দেন। এরিই মাঝে অপর একটি ঘটনার তথ্য সংগ্রহের জন্য ঐ গ্রামে গিয়ে এক পর্যায়ে অভিযোগের ঘটনাটি জানার পরই সাংবাদিকরা অভিযোগের বিষয়ে জানতে সরজমিনে সে সময় বিদ্যালয়ে গেলেও সহকারী শিক্ষক হায়দার আলী সহ অভিযোগকারী শিক্ষিকারা অভিযোগের বিষয়ে কোন তথ্য সাংবাদিকদের না দিয়ে উল্টো সাংবাদিকদের সে সময় প্রশ্ন করেন, কিসের অভিযোগ, কার কাছে অভিযোগ করা হয়েছে, কে আপনাদের এখানে আসতে বলেছি সহ ইত্যাদি। শিক্ষক অফিস রুমে পূর্বে থেকে অবস্থান করা ( কমিটি সদস্য বা শিক্ষার্থী অভিভাবক নয়) রবিউল ও সাংবাদিকদের নানা প্রশ্ন করেন। এমনকি শিক্ষিকাদের অভিযোগে সাক্ষরকারী রবিউল এমনও বলেন, একটাই আমাদের দাবি প্রধান শিক্ষক এখান থেকে বদলি হোক, এরপর অভিযোগ বা কোন ঝামেলা হবেনা বলেও শতভাগ নিশ্চিত করে চালেঞ্জ করে বলেন, আপনারা প্রধান শিক্ষককে সরানো পারলে আমি বলছি যে সব অভিযোগ করা হয়েছে কিছুই আর থাকবে না, এমনকি কথার প্রসঙ্গে তিনি কমিটি নিয়ে বিরোধ সহ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দোষারোপ করেও কথা বলেন, এসব কথার ভিডিও প্রতিবেদক সহ সাংবাদিকদের কাছে সংরক্ষীত আছে।
পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সহ নানা অনিয়মের প্রতিবাদে ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সাবেক সভাপতি গ্রুপের কয়েকজন অভিভাবক গত ৫ মার্চ সকালে স্কুল প্রাঙ্গনে মানববন্ধন পালন করেন। মানব বন্ধনের খবর জানতে পেরে ঘটনার বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহের জন্য দুপুরের দিকে সাংবাদিক সুইট ঐ স্কুলে যাওয়া মাত্র স্কুলের সহকারি শিক্ষক হায়দার আলীর নেতৃত্বে ১৩-১৪ জন সন্ত্রাসী কায়দায় সাংবাদিক সুইট হোসেনর উপর চড়াও হোন এবং মারপিট করে তার ক্যামেরা ও নগদ টাকা ও চেন ছিনতাই করে নেয়। সাংবাদিকের উপর হামলার পরই মহাদেবপুর উপজেলার সাংবাদিকরা ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেন। এবং পরবর্তীতে প্রতিবাদ সভা সহ মানব বন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।