জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২১
সেরাদের পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বিনোদন ডেস্ক
চলতি বছর ২৬ জানুয়ারি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২১-এর বিজয়ীদের নাম। গতকাল ৯ মার্চ বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বর্ণাঢ্য এক আয়োজনে সরাসরি উপস্থিত হয়ে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে করোনা মহামারির কারণে ২০১৯ ও ২০২০ সালের পুরস্কার আসরে প্রধানমন্ত্রী সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারেননি। তাই দুই বছর পর তাঁর হাত থেকে পুরস্কার নেওয়ার সুযোগ পেলেন চলচ্চিত্র শিল্পী, নির্মাতা, প্রযোজক ও কলাকুশলীরা। কয়েকটি ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে পুরস্কৃত হয়েছেন শিল্পীরা। ফলে ২৭টি ক্যাটাগরিতে মোট ৩৪টি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে এবার।
এবার আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন অভিনেত্রী ডলি জহুর ও অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন। ডলি জহুর প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তাঁর পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। তবে দেশের বাইরে থাকায় ইলিয়াস কাঞ্চন অনুষ্ঠানে ছিলেন না। ইলিয়াস কাঞ্চনের পক্ষে তাঁর বোনের মেয়ে সম্মাননা গ্রহণ করেছেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন হাসানুল হক ইনু। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারির সময়েও আমরা পুরস্কার স্থগিত রাখিনি। কমসংখ্যক ছবি মুক্তি পেয়েছিল, অনেকে বলেছিল, ওই বছর পুরস্কার না দিলে ভালো হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দিয়েছিলেন, দিতে হবে।’ তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সারা বিশ্বে সিনেমাশিল্প নানা চাপ ও হুমকির মুখে পড়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের সিনেমাশিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব অঙ্গনে পুরস্কৃত হয়েছে, সুনাম কুড়িয়েছে।’
পুরস্কার প্রদান শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যাঁরা পুরস্কার পেয়েছেন, তাঁদের আন্তরিক শুভেচ্ছা। এটা আমাদের স্বাধীনতার মাস। এই দেশের অভ্যুত্থানের সঙ্গে মার্চ অত্যন্ত গভীরভাবে মিশে আছে। ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মদিন, ৭ মার্চ তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস; এই মাসে আপনাদের সামনে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। বঙ্গবন্ধু শুধু আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে যাননি, আজকে যে সিনেমাশিল্প গড়ে উঠেছে, এর সূচনা করেছিলেন তিনি।’
অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনা করেছেন অভিনেতা ফেরদৌস ও নুসরাত ফারিয়া। বঙ্গবন্ধু ও দেশমাতৃকা নিয়ে ছিল ওয়ার্দা রিহাবের বিশেষ পরিবেশনা। আরও পারফর্ম করেছেন অপু বিশ্বাস, নিপুণ, তারিন, বাপ্পি চৌধুরী, জায়েদ খান, ইমন, নীরব, দীঘি, আঁচল, পূজা চেরি, ঐশী, তমা মির্জা প্রমুখ। গান গেয়েছেন পার্থ বড়ুয়া, আঁখি আলমগীর, ইমরান, কোনাল, লিজা, সাব্বির,
নন্দিতা ও নিশিতা বড়ুয়া।
সেরাদের তালিকা, আজীবন সম্মাননা: ডলি জহুর ও ইলিয়াস কাঞ্চন
চলচ্চিত্র (যৌথভাবে): লাল মোরগের ঝুঁটি (মাতিয়া বানু শুকু) ও নোনাজলের কাব্য (রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত)
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: ধড় (আকা রেজা গালিব)
প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: বধ্যভূমিতে একদিন (কাওসার চৌধুরী)
চলচ্চিত্র পরিচালক: রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য)
অভিনেতা (যৌথভাবে): মো. সিয়াম আহমেদ (মৃধা বনাম মৃধা) ও মীর সাব্বির মাহমুদ (রাতজাগা ফুল)
অভিনেত্রী (যৌথভাবে): আজমেরী হক বাঁধন (রেহানা মরিয়ম নূর) ও তাসনোভা তামান্না (নোনাজলের কাব্য)
অভিনেতা (পার্শ্বচরিত্রে): এম ফজলুর রহমান বাবু (নোনাজলের কাব্য)
অভিনেত্রী (পার্শ্বচরিত্রে): শম্পা রেজা (পদ্মাপুরাণ)
অভিনেতা (খলচরিত্রে): মো. আবদুল মান্নান জয়রাজ (লাল মোরগের ঝুঁটি)
অভিনেতা (কৌতুক চরিত্রে): প্রভাষ কুমার ভট্টাচার্য্য মিলন (মৃধা বনাম মৃধা)
শিশুশিল্পী: আফিয়া তাবাসসুম (রেহানা মরিয়ম নূর)
শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার: জান্নাতুল মাওয়া ঝিলিক (যা হারিয়ে যায়)
সংগীত পরিচালক: সুজেয় শ্যাম (যৈবতী কন্যার মন)
গায়ক: কে এম আবদুল্লাহ-আল-মুর্তজা মুহিন (শোনাতে এসেছি আজ-পদ্মাপুরাণ) গায়িকা: চন্দনা মজুমদার (দেখলে ছবি পাগল হবি-পদ্মাপুরাণ)
গীতিকার: প্রয়াত গাজী মাজহারুল আনোয়ার (অন্তরে অন্তর জ্বালা-যৈবতী কন্যার মন) সুরকার: সুজেয় শ্যাম (অন্তরে অন্তর জ্বালা-যৈবতী কন্যার মন)
কাহিনিকার: রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য)
চিত্রনাট্যকার: নূরুল আলম আতিক (লাল মোরগের ঝুঁটি)
সংলাপ রচয়িতা: তৌকীর আহমেদ (স্ফুলিঙ্গ)
সম্পাদক: সামির আহমেদ (লাল মোরগের ঝুঁটি)
শিল্প নির্দেশক: শিহাব নূরুন নবী (নোনাজলের কাব্য)
চিত্রগ্রাহক (দলগত): সৈয়দ কাশেফ শাহবাজি, সুমন কুমার সরকার, মাজহারুল ইসলাম রাজু (লাল মোরগের ঝুঁটি)
শব্দগ্রাহক: শৈব তালুকদার (রেহানা মরিয়ম নূর)
পোশাক ও সাজসজ্জা: ইদিলা কাছরিন ফরিদ (নোনাজলের কাব্য)
মেকআপম্যান (দলগত): মো. ফারুখ, মো. ফরহাদ রেজা মিলন (লাল মোরগের ঝুঁটি) মুজিব বর্ষের চলচ্চিত্র: টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই।