বাংলাদেশ সরকার এবারের ঈদে নতুন বঙ্গবন্ধু নোট বাজারে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে, এপ্রিলের শেষ নাগাদ এসব নতুন নোট বাজারে আসবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ঈদের সময় নতুন নোটের প্রচুর আবেদন থাকলেও, নতুন নোটের প্রস্তুতি এখনও সম্পন্ন হয়নি। এর কারণ, জুলাই আন্দোলনের ছবিযুক্ত নোট এখনও প্রস্তুত হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর লন্ডন সফরে এক সাক্ষাৎকারে জানান, সরকারের নির্দেশে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং অবশিষ্ট নোটগুলো আপাতত সংরক্ষণ করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, অতিরিক্ত ছাপানো পুরনো নোটগুলোর অবশিষ্টাংশ বর্তমানে বাজারে ছাড়া হচ্ছে না। নতুন নোট ছাপানোর জন্য একটি ব্রিটিশ এবং একটি সুইস কোম্পানি কাজ করছে এবং এপ্রিলের শেষ নাগাদ এসব নোট বাজারে আসতে পারে।
রেমিট্যান্সে ইতিহাসের সর্বোচ্চ প্রবাহের আশা
এছাড়া, রেমিট্যান্স নিয়ে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, চলতি মাসে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিহাসের সর্বোচ্চ পরিমাণ অর্থ আসতে পারে। ২০২০ সালের জুলাই মাসে আড়াই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসার রেকর্ড ছিল, তবে এ মাসের ১৯ দিনে ইতোমধ্যে সোয়া ২ বিলিয়ন ডলার এসেছে এবং গভর্নর আশাবাদী যে, চলতি মাসে তা ৩ বিলিয়ন ডলার হতে পারে। তিনি বলেন, এই রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রণোদনা বা অর্থপাচার বন্ধ হওয়ার কারণে ভালো হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য আশার বার্তা।
বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর চেষ্টা
গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ব্রিটেনে একটি সফরকালে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের সহযোগিতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এস আলম গ্রুপসহ কিছু ব্যক্তি বাংলাদেশের অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন, যার পরিমাণ প্রায় ১৫-২০ বিলিয়ন ডলার। তিনি বলেছেন, এসব অর্থ ফেরাতে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পাচারের চিহ্নিত স্থানগুলো খুঁজে বের করা হয়েছে এবং এস আলম গ্রুপের অর্থ ফেরানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে ব্রিটিশ সরকার, সংশ্লিষ্ট এনজিও এবং লিগ্যাল ফার্মের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
বাংলাদেশের রিজার্ভের অবস্থা
বাংলাদেশের রিজার্ভের অবস্থা নিয়ে গভর্নর বলেন, অর্থপাচার বন্ধ হওয়ায় বর্তমানে রিজার্ভের ক্ষয় অনেকটাই কমে এসেছে। আইএমএফের বিপিএম-সিক্স অনুযায়ী ২০ মার্চ বাংলাদেশে রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার।
এভাবে নতুন নোট বাজারে না ছাড়ার সিদ্ধান্ত এবং রেমিট্যান্স প্রবাহের আশাবাদী তথ্য দেশটির অর্থনীতির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছে।