পিত্তথলির পাথর (Gallstones) হেপাটোবিলিয়ারি সিস্টেমের অন্যতম সাধারণ সমস্যা। বিশ্বজুড়ে এ রোগে আক্রান্তের হার ১০-১৫ শতাংশ, বাংলাদেশে প্রায় ১০-১২ শতাংশ। তবে রোগীদের প্রায় ৮০ শতাংশের কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না।
✅ পাথর হওয়ার কারণ
পিত্তরস মূলত কোলেস্টেরল, বাইল অ্যাসিড, বাইল পিগমেন্ট, ক্যালসিয়াম লবণ ও ফসফোলিপিড দিয়ে তৈরি। এ উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট হলে পাথর তৈরি হয়।
✅ কারা ঝুঁকিতে
অতিরিক্ত ওজন
উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার গ্রহণকারী
জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি গ্রহণকারী নারী
ক্ষুদ্রান্ত্রের রোগগ্রস্ত ব্যক্তি
লিভার সিরোসিস রোগী
জেনেটিক ফ্যাক্টর
পিত্তরসে ইনফেকশন বা পিত্তনালিতে কৃমি
✅ লক্ষণ
উপরের পেটে ব্যথা (ডান কাঁধ/পিঠে ছড়াতে পারে)
বমি বা বমির ভাব
জ্বর
✅ রোগ নির্ণয়
শারীরিক পরীক্ষা
আল্ট্রাসনোগ্রাফি (সাধারণত যথেষ্ট)
✅ চিকিৎসা
অপারেশনই প্রধান চিকিৎসা
পদ্ধতি:
খোলা পদ্ধতি
ল্যাপারোস্কোপিক অপারেশন (বর্তমানে সবচেয়ে প্রচলিত ও নিরাপদ)
❗ সবার কি অপারেশন দরকার?
না। লক্ষণবিহীন পাথরের ক্ষেত্রে অপারেশন না করলেও চলতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে অপারেশন জরুরি:
বড় পাথর (>৩ সেমি)
পিত্তনালিতে পাথর
পলিপ >১ সেমি (ক্যানসারের ঝুঁকি)
পিত্তথলির দেওয়াল শক্ত হয়ে গেলে
ডায়াবেটিস রোগী
উপসর্গ থাকলে
অপারেশন না করলে কী সমস্যা হতে পারে
বারবার ব্যথা, বমি
ইনফেকশন, পুঁজ
পিত্তথলি ফেটে যাওয়া
জন্ডিস
বিরল হলেও ক্যানসার
ভুল ধারণা ভাঙুন
অনেকে ভাবেন, ল্যাপারোস্কোপিক অপারেশনে পাথর থেকে যেতে পারে বা আবার হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, অপারেশনে পুরো পিত্তথলি সরিয়ে ফেলা হয়। তাই থলিতে পাথর হওয়ার সুযোগ থাকে না।
🛡️ প্রতিরোধে করণীয়
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
স্বাস্থ্যসম্মত খাবার
শাকসবজি ও পানি বেশি খাওয়া
চর্বিযুক্ত খাবার কম খাওয়া
নিয়মিত ব্যায়াম
ভালো ঘুম
বিশেষ পরামর্শ
প্রতিরোধই সেরা পথ
উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
জেনারেল বা হেপাটোবিলিয়ারি সার্জনের পরামর্শ গ্রহণ করুন
লেখক:
কনসালটেন্ট ও বিভাগীয় প্রধান (সার্জারি)
কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, উত্তরা, ঢাকা
চেম্বার: পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, উত্তরা (জসিমউদ্দিন শাখা)