আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য বেশ কিছু করসুবিধার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব প্রস্তাব কার্যকর হলে ব্রোকারহাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকাগুলো সরাসরি উপকৃত হবে। অন্যদিকে ভাল ও বড় আকারের কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হতে পারে। কিন্তু বাজারের প্রাণ যে বিনিয়োগকারীরা তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু নেই। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবি জানানো হলেও তাতে সাড়া দেননি অর্থ উপদেষ্টা।
আজ সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণের মাধ্যমে প্রস্তাবিত বাজেট তুলে ধরেন। এতে পুঁজিবাজার সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি প্রস্তাব রয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকা-বহির্ভূত কোম্পানির মধ্যে কর হারের ব্যবধান ২.৫০ শতাংশ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। তাতে এই ব্যবধান দাঁড়াবে ৭.৫০ শতাংশ। বর্তমানে এই দুই ধরনের কোম্পানির মধ্যে কর হারের ব্যবধান ৫ শতাংশ। এক সময় এটি ১০ শতাংশ ছিল। গত চলতি অর্থবছরের বাজেটে এটি ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিসহ সংশ্লিষ্টরা এই ব্যবধানকে পুনরায় ১০ শতাংশে উন্নীত করার সুপারিশ জানিয়েছিল।
ঘোষিত বাজেটে মার্চেন্ট ব্যাংকের করহার ১০ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো প্রকৃত অর্থে ব্যাংক না হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে ব্যাংকের সমান হারে অর্থাৎ ৩৭.৫ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হয়। আগামী অর্থবছরে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে ২৭.৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। টানা দর পতনে নাজুক পুঁজিবাজারে আর্থিক সংকটে পড়া মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো কর কমানোর কারণে একটু স্বস্তি পাবে।
বাজেটে স্টক ব্রোকারদের দাবির প্রেক্ষিতে লেনদেনর উপর উৎসে করের হার কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাব অনুসারে, আগামী অর্থবছরে ব্রোকারহাউজগুলোকে ০.০৩ হারে এই কর দিতে হবে। বর্তমানে লেনদেনের উপর ০.০৫ শতাংশ হারে উৎসে কর দিতে হয় এসব প্রতিষ্ঠানকে।
বিনিয়োগকারীসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডররা ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স তথা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে মূলধনী মুনাফার উপর বিদ্যমান কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু এ দাবিতে সাড়া দেননি অর্থ উপদেষ্টা। বাজেটে নেই এর প্রতিফলন।
পুঁজিবাজারে বর্তমানে যে মন্দা বিরাজ করছে তাতে কারোরই মূলধনী মুনাফা হচ্ছে না। তাই সরকার কোনো করও পাচ্ছে না। এ কারণে এই কর বহাল থাকলেও সরকারের কোনো লাভ নেই। কিন্তু ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স প্রত্যাহার করা হলে বাজারে নতুন বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়তো। বাজার চাঙা হলে লেনদেন বেড়ে যেতো। তাতে স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে সরকারের রাজস্ব প্রাপ্তি বেড়ে যেত।
তবে বিনিয়োগকারীরা সরাসরি কিছু না পেলেও প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়িত হলে পরোক্ষভাবে তারা কিছুটা লাভবান হবেন। বাজেটে নেওয়া ব্যবস্থাগুলোর কারণে বাজার কিছুটা গতিশীল হলে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিওতে।