বাংলাদেশ থেকে যখনই কেউ বিশ্বমঞ্চে যে কোনো ক্ষেত্রে অসামান্য সফলতা অর্জন করে, তখন আমাদের প্রত্যেকের হৃদয় আনন্দ ও গর্বে ভরে ওঠে। বিশ্বব্যাপী অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রিতে রে অ্যাডভার্টাইজিং সেরকমই একটি কোম্পানির নাম।
সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রির বাজার মূল্য ২০২৪ সালে ১৮.৫ বিলিয়ন ডলার । এই বিশাল ইন্ডাস্ট্রিতে বাংলাদেশের ডিজিটাল মার্কেটিং এর ইতিহাসে প্রথম এবং একমাত্র ইউএস রেজিস্ট্রার্ড কমার্শিয়াল কোম্পানি হিসেবে রে অ্যাডভার্টাইজিং বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে এক অকল্পনীয় উচ্চতায়।
২০২০ সালে বগুড়ার ছোট একটি শহর থেকে শুরু হয়েছিল Ray Advertising এর এই অসাধারণ যাত্রা। যেটি মাত্র ৫ বছরের মাথায় আমেরিকার ইন্ডাস্ট্রির টপর্যাংকের কয়েকটি কোম্পানীর মধ্যে একটি । বর্তমানে Ray Advertising ইন্ডাস্ট্রিতে ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৩২৭ কোটি ডলার এক বিশাল অবদান রেখে নিজ সুনাম বজায় রেখেছে ।
এই অসামান্য সাফল্যের পিছনের মূল মাস্টারমাইন্ড ও রূপকার হচ্ছেন এই কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মিঃ রিপন কুমার, যাকে অনেকেই ‘GOAT’ অর্থাৎ ‘Greatest of All Time’ হিসেবে সম্বোধন করেন। একটি সেকেন্ড হ্যান্ড পুরানো কম্পিউটার দিয়ে যার যাত্রা শুরু হয়েছিল, আজ তিনি সাফল্যের মণিকোঠায় বিরাজমান।
তিনি শুধু একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেননি, বরং বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে বিজনেস লিডারশীপের এক জীবন্ত পথপ্রদর্শক এবং অনুপ্রেরনা রূপে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন । তিনি প্রমাণ করেছেন যে সামান্য ফ্রিল্যান্সিং থেকে শুরু করে কেউ চাইলে, ডিজিটাল দুনিয়ায় মিলিয়ন ডলার ভলিউমের কোম্পানি প্রতিষ্ঠার অভূতপূর্ব স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
২. রিপন কুমার: A Man of “The Midas touch”
বগুড়া থেকে লাস ভেগাস – রিপন কুমারের জীবনগতি এক অবিশ্বাস্য গল্পের মতো। ঠিক কিভাবে আজকের এই অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছেন, পুরাটা না জানলে হয়তো যে কারো কাছে তা অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। জীবনের প্রতিটি ধাপে ছিল চড়াই-উতরাই, ত্যাগ আর অদম্য মানসিক শক্তির প্রয়াস।
নাম না জানা একটি গ্রামের দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মি. রিপন কুমার। লেখাপড়ায় ছিলেন মারাত্মক তুখোর, স্কুলে কখনও প্রথম স্থান থেকে দ্বিতীয় হননি। অন্যদিকে, শৈশব থেকেই পরিবারের দূবেলা আহার যোগানোর দায়িত্বও তাকে কাধেঁ তুলে নিতে হয় ।
রোদ বৃষ্টি ঝড় উপেক্ষা করে বাবার সাথে তাকেও বেরিয়ে পরতে হতো পুকুরে মাছ শিকারের জন্য ; নতুবা কয়েক মন ওজনের প্রচন্ড ভারী সেচের মেশিন কাঁধে নিয়ে যেতে হতো ভাড়া দিতে অন্যের জমিতে। ১০/১২ বছরেই কিশোর রিপন কুমার জীবনের কষ্ট এবং জগতের রুক্ষতা উপলব্ধি করে ফেলেছিলেন , আর সেকারনেই তাঁর শিক্ষাটি শুধু পুঁথিগত বিদ্যায় সীমাবদ্ধ থাকেনি, তিনি শিখতে পেরেছিলেন রূঢ় বাস্তবতা থেকে, বেঁচে থাকার কঠোর লড়াইয়ের মাঝে। সময়ের প্রতিটি ধাপে সেই বৈরি সংগ্রাম আর দুঃখদুর্দশা তার ব্যাক্তিত্বকে ধীরে ধীরে ঘষে মেজে গড়ে তুলছিল দৃঢ় মনোবল সম্পন্ন আর সুনিপূন পরিপক্কতায়।
১২ বছরের একটি ছোট্ট ছেলে যখন তার বন্ধুদের সাথে মাঠে খেলতে যাওয়ার কথা, তখন তাঁকে যেতে হতো মাছ বিক্রি করতে খাবার যোগাড়ের জন্য। যেখানে নানীর কোলে মাথা দিয়ে রূপকথার গল্প শুনতে শুনতে রাতে ঘুমিয়ে পড়ার কথা সেখানে তিনি সারারাত বসে সেচের মেশিন পাহাড়া দিতেন নির্জন কোন পুকুর পাড়ে, গভীর অন্ধকারে , একা।
কঠোর পরিশ্রম করার কারণেই তার মধ্যে ধৈর্য্য, একাগ্রতা এবং অধ্যাবসায় স্বভাবগত হয়ে গিয়েছিল। তার সাথে ছিল তীক্ষ্ণ মেধার প্রতীতি অর্থাৎ অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান এবং নিজস্ব বিচার বিশ্লেষন দুটোর সম্যক মিথস্ক্রিয়ায় সঠিক উপলব্ধিতে পৌছাঁনের সহজাত পারদর্শিতা। যা ছিল তার সঠিকপথে এগিয়ে যাওয়ার মূলমন্ত্র।
গ্রামের বাজারে মাছ বিক্রী করতে গিয়ে তার ব্যবসার হাতেখড়ি হয়। আজকে যার ফলাফল আমরা দেখতে পাই রে অ্যাডভার্টাইজিং এর সফলতা অর্জনে। তিনি যেখানেই হাত দিয়েছেন তাঁর অতীব ধীশক্তি আর বিচক্ষনতায় সেখানেই সফলতা এনে দেখিয়েছেন।
স্টিভ জবসের অ্যাপলের মতো কোম্পানির কথা যদি চিন্তা করি যার শুরুটা হয়েছিল তার বাসার গারাজে, গুগলেরটা তো ছিল আবার ভাড়ায় নেয়া। অদ্ভূত হলেও সত্যি আজাকের রে অ্যাডভার্টাইজিং পিছনেও ছিল মি. রিপনের পুরানো একটি সেকেন্ড হ্যান্ড কম্পিউটার কেনার মধ্যে দিয়ে । নিছক বিনোদনের জন্য অর্থ খরচ করে কম্পিউটার কেনার মতো বিলাসীতা তাঁর ছিলনা। পুরানো কম্পিউটারটি কেনার সিদ্ধান্তটি ছিল তার নেয়া প্রথম বিনিয়োগ ।
তিনি বিশ্বাস করতেন যে ফ্রিল্যান্সিং করে তিনি তারঁ পরিবারকে দারিদ্রের অভিশাপ থেকে বের করে নিয়ে আসবেন। অর্থনৈতিক সংকট, পারিপার্শ্বিক চাপ এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মাঝে তিনি ঠিকই তাঁর লক্ষ্যকে আঁকড়ে ধরে রাখেন এগিয়ে যেতে থাকেন।
“আমার শুরুটা ছিল খুবই সাধারণ,” বলেন রিপন কুমার। “প্রতিদিন ১০-১২ ঘণ্টা কাজ করে শিখতাম, এক্সপেরিমেন্ট করতাম, অনেকবার ব্যর্থ হয়েছি কিন্তু কখনো হাল ছাড়িনি।”
— মি. রিপন কুমার
ফ্রিল্যান্সিং থেকে ধাপে ধাপে তিনি নিজের দক্ষতা বাড়ান। লিড জেনেরেশন, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ইত্যাদি ডিজিটাল মার্কেটিং –এর প্রত্যেকটি বিষয়ে নিজেকে পারদর্শী করে তোলেন। কিন্তু তাঁর স্বপ্ন ছিল আরও বড়। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে রয়েছে অপার সম্ভাবনা, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এবং এই বিজনেস থেকেই বড় ভলিউমের প্রফিট অজর্ন করা সম্ভব।
২০২০ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন Ray Advertising। শুরুতে মাত্র কয়েকজন কর্মী নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও, তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্ব ও মার্কেট বোঝার ক্ষমতা দ্রুতই কোম্পানিকে সফলতার পথে নিয়ে যায়। মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে, তার কোম্পানি বাংলাদেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করে।
৩. রে অ্যাডভার্টাইজিং: একটি নতুন মাইলফলক
বাংলাদেশের ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ইতিহাসে নিঃসন্দেহে Ray Advertising একটি নুতন অধ্যায়ের নাম। আজ পারফরম্যান্স মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রির বিশ্ব বাজারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জায়ান্ট কর্পোরেশনগুলোর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে Ray Advertising প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে যাচ্ছে।
এডসউইকিয়া’র ২০২৫ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, Ray Advertising কে সর্বোচ্চ মান ও ভলিউমের জন্য শীর্ষস্থানীয় নেটওয়ার্ক” হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে মার্কেটবল, ম্যাক্সবাউন্টি,অলস্টেইট, স্টেইট ফার্ম এবং ভিভিন্ট এর মতো বিশ্বমানের ক্লায়েন্টের সাথে Ray Advertising কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে প্রথম ইউএস রেজিস্ট্রার্ড অ্যাফিলিয়েট কোম্পানি হিসেবে এটি শুধু একটি কোম্পানি নয়, এটি এক বিশাল বিশ্ব-অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক।
আমেরিকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা অ্যাডভার্টাইজারদের সাথে Ray Advertising দক্ষ অ্যাফিলিয়েটদের বা পাবলিশারদের সংযোগ স্থাপন করে দেয় যারা তাদের সেবা বা প্রডাক্ট মার্কেটিং করে আসল গ্রাহকদের পৌঁছানোর জন্য, যাতে প্রতিষ্ঠানগুলোর সেইলস এবং গ্রোথ বৃদ্ধি পায়।
বর্তমানে কোম্পানিটির সক্রিয় ক্যাম্পেইনের সংখ্যা ২৫০+, অ্যাফিলিয়েটের সংখ্যা ৩৫০০+ এবং স্পন্সরের সংখ্যা ১০+। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব থেকে ৩০০+ দক্ষ কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে যাদের মধ্যে রয়েছে আমেরিকা, মেক্সিকো , ব্রিটেইন, জার্মান, ব্রাজিল, উজবেকিস্তান, এবং পাকিস্তান এর নাগরিকরা।
কোম্পানিটি মূলত ইনশিওরেন্স, হোম সার্ভিস, হেলথকেয়ার এবং আইনি সেবার মতো উচ্চ চাহিদাসম্পন্ন খাতগুলোতে পে-পার-কল, লিড জেনারেশন এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সার্ভিস প্রদান করে থাকে।
প্রচলিত বিজ্ঞাপন পদ্ধতির বাইরে গিয়ে রে অ্যাডভার্টাইজিং পারফরম্যান্স বেইজড মার্কেটিং মডেল অনুসরণ করে। এখানে বিজ্ঞাপনদাতারা কেবল তখনই পেমেন্ট করেন যখন তারা ভেরিফায়েড কল পান অথবা এমন কাস্টমার পান যারা সত্যিকার অর্থেই কেনার জন্য প্রস্তুত।
Ray Advertising-এর যুক্তরাষ্ট্রের পে-পার-কল সেক্টরে ‘এক’ নম্বর র্যাংকিং তাদের বিশেষজ্ঞতা, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং অ্যাফিলিয়েট-কেন্দ্রিক বিজনেস মডেলের প্রমাণ। বৃহত্তর অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রিতে Ray Advertising নির্ভরযোগ্য রেজাল্ট-ভিত্তিক অ্যাডভার্টাইজিংয়ে কল-কনভার্সন এর উপর গুরুত্ব দিয়ে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে। স্বচ্ছ রিপোর্টিং ও রেগুলেটরি কমপ্লায়েন্স-এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ইউএস মার্কেটে আস্থার প্রতীক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
৪. আন্তর্জাতিক কনফারেন্স ও স্বীকৃতি: রে অ্যাডভার্টাইজিংয়ের অনন্য অর্জন
রে অ্যাডভার্টাইজিংয়ের কর্মক্ষেত্র এখন সীমানা ছাড়িয়ে পৃথিবীর ৫০টিরও বেশি দেশে বিস্তৃত। প্রতি বছর অ্যাফিলিয়েট ওয়ার্ল্ড ডুবাই, মেডিক্যারিয়ান, ম্যাসটর্ট, এবং লিডসকন ভেগাস-এর মতো বিশ্বের ৩০-৪০টি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে রে অ্যাডভার্টাইজিং প্রতিষ্ঠানটিকে “পারফরমেন্স মার্কেটিং ট্রেন্ডসেটার” হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ২০২৩ সালে মেডিক্যারিয়ান এবং অ্যাফিলিয়েট ইস্ট সামিট এর মতো বিশ্বব্যাপি ইভেন্টগেুলোতে অংশগ্রহনের পাশাপাশি স্পন্সরিং পার্টনারশীপ হিসেবে রে অ্যাডভার্টাইজিং প্রতিনিধিত্ব করেছিল ।
ইভেন্টে সিইও এবং প্রতিষ্ঠাতা রিপন কুমার নিল প্যাটেল-এর মতো কিংবদন্তীদের সাথে প্যানেল আলোচনায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করে থাকেন। এছাড়াও অফারভল্ট, অ্যাফপেয়িং-এর মতো প্ল্যাটফর্মের সাথে কৌশলগত পার্টনারশিপে রে অ্যাডভার্টাইজিং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের টেক-সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে।
সম্প্রতি Ray Advertising নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ইভেন্টগুলোতে অংশগ্রহণ করেছে:
অ্যাফিলিয়েট ওয়ার্ল্ড দুবাই ২০২৪ (২৬-২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪)
দুবাই ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই ইভেন্টে ১১০+ দেশ থেকে ৭,০০০+ অংশগ্রহণকারী যোগ দেন। রিপন কুমার এই ইভেন্টে রে অ্যাডভার্টাইজিং এর প্রতিনিধিত্ব করেন।
লিডসকন লাস ভেগাস ২০২৪ (৮-১০ এপ্রিল):
প্যারিস হোটেল এবং ক্যাসিনো লাস ভেগাসে অনুষ্ঠিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় লিড জেনারেশন ইভেন্টে, ২৫টি মূল ইন্ড্রাস্ট্রি থেকে ৩,০০০ লিড-জেন পেশাদার একত্রিত হন। গত বছর, রিপন কুমার এই ইভেন্টে অংশ নিয়ে বিজনেসে লিড জেনারেশন, ক্রয় এবং পরিমাপ সম্পর্কে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন।
অ্যাফিলিয়েট ওয়ার্ল্ড এশিয়া ২০২৪ (৪-৫ ডিসেম্বর):
সেন্টারা গ্র্যান্ড এবং ব্যাংকক কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই ইভেন্টে ১১০+ দেশের ৬,০০০+ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বিশেষজ্ঞদের সমাবেশ হয়। রে অ্যাডভার্টাইজিং এর সিইও রিপন কুমার এই মঞ্চে অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক মার্কেটিং সম্পর্কে গভীর অন্তর্দৃষ্টি ও উদ্ভাবনী আইডিয়া শেয়ার করেন।
অ্যাফিলিয়েট সামিট ইস্ট ২০২৪ (২৯-৩০ জুলাই):
নিউ ইয়র্ক ম্যারিয়ট মার্কুইস টাইমস স্কয়ারে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে ৪,৫০০+ ডিজিটাল মার্কেটিং পেশাদারদের সমাগম ঘটে। রিপন কুমার শীর্ষ লিড ক্রেতা, পারফরম্যান্স মার্কেটার এবং ই-কমার্স বিক্রেতাদের সাথে সহযোগিতামূলক সেশনে অংশ নেন।
কন্টাক্ট আইও ২০২৩ (৩০ আগস্ট – ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩)
হায়াট রিজেন্সি ডেনভারে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে ৮০০+ শিল্প পথপ্রদর্শক যোগ দেন, যার মধ্যে ছিলেন পে-পার-কল মার্কেটার, কল সেন্টার এক্সিকিউটিভ, উদ্যোক্তা, এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবকরা। রিপন কুমার এই ইভেন্টে একজন সম্মানিত অথিতী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
রে অ্যাডভার্টাইজিং শুধু একটি আন্তর্জাতিক মানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবেই নয়, এটি হাজারো বাংলাদেশি শিক্ষিত তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। বর্তমানে কোম্পানির বাংলাদেশি অপারেশনে ৫০ জনেরও বেশি পেশাদার কর্মরত রয়েছেন, যারা গড়ে প্রতি মাসে ৩০০-১৫০০ ডলার পর্যন্ত আয় করছেন।
“রে অ্যাডভার্টাইজিং শুধু একটি কোম্পানি নয় — এটি বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশিদের এগিয়ে আসার উদ্দাত্ত একটি কণ্ঠস্বর। যখনই আমরা আমাদের টিম সম্প্রসারণ করি, আমি সবসময় অন্য দেশের প্রার্থীদের চেয়ে বাংলাদেশি প্রতিভাবানদের অগ্রাধিকার দিই । কারণ আমি আমাদের মানুষের উপর বিশ্বাস রাখি। আমি তাদের সম্ভাবনা, তাদের নিষ্ঠা, আর শেখার ও এগিয়ে যাওয়ার তীব্র ইচ্ছাকে গভীরভাবে বিশ্বাস করি।”
প্রতি বছর রে অ্যাডভার্টাইজিং ২৫০ জন বাংলাদেশি তরুণকে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে এবং ১০০% চাকরি নিশ্চিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ পদক্ষেপ শুধু তাদের ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য নয়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বৈদেশিক মুদ্রা আয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
৬. Ray Advertising-এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
আগামী ২-৫ বছরের মধ্যে Ray Advertising-এর রয়েছে সুদূরপ্রসারী ও সুসংগঠিত পরিকল্পনা। আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করা এবং দেশটির বৃহৎ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আরও উন্নত তথ্য নির্ভর কাস্টমাইজড সেবার পরিধি বাড়ানো। পাশাপাশি, ইউরোপ ও এশিয়ার সম্ভাবনাময় বাজারেও রে অ্যাডভার্টাইজিং তার কার্যক্রম বিস্তারের লক্ষ্য নিয়েছে—বিশেষ করে ব্রিটেন, জার্মানি এবং জাপানের মতো দেশে।
এর পাশাপাশি, বাংলাদেশে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা এবং তাদের জন্য বৃহত্তর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করাও আমাদের অগ্রাধিকার তালিকায় অন্যতম শীর্ষে রয়েছে।
৭. একটি অনুপ্রেরণার গল্প
বগুড়ার ছোট্ট একটি শহর থেকে মার্কিন বাজারের শীর্ষে – রে অ্যাডভার্টাইজিং-এর এই অগ্রযাত্রা প্রমাণ করে যে সত্যিকারের প্রতিভা ও অদম্য ইচ্ছাশক্তির সামনে কোনো সীমানা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।
Ray Advertising-এর সুদক্ষ নেতৃত্ব, অনন্য ব্যবসা মডেল, এবং প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার কারণে আগামী বছরগুলোতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বাজারে তাদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
জনাব রিপন কুমার তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অভ্যূত্থান না ঘটলে বিশ্বসভ্যতার সোপানে আমরা পৌঁছাতে পারবনা। আমার লক্ষ্য বাংলাদেশের তরুণদের জন্য গ্লোবাল মার্কেটে কাজ করার প্লাটফর্ম তৈরি করা। আমি চাই বাংলাদেশি টেকনোক্র্যাটরা বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে সম্মানের সাথে নিজেদের মেধা প্রতিফলন করতে পারুক।”
রে অ্যাডভার্টাইজিং এবং মি. রিপন কুমার সেই অনুপ্রেরণাই আমাদের দেন – সীমানার বাইরে ভাবতে, বৈশ্বিক চিন্তা করতে এবং অসাধ্য সাধনে সাহসী হতে।
আজ যখন বিশ্বের বিভিন্ন বড় বড় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কনফারেন্সে Ray Advertising ও মি. রিপন কুমারের নাম সম্মানের সাথে উচ্চারিত হয়, তখন তা শুধু একজন ব্যক্তি বা একটি কোম্পানির সফলতার সীমাদ্ধ থাকেনা, এটি সমগ্র বাংলাদেশের সম্মান, বিজয়, এবং গৌরবের প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়।
যোগাযোগ করুন : https://www.rayadvertising.com
লেখক : নাঈম আহমাদ শাওন :পদবী: ব্যবস্থাপনা পরিচালক, রে অ্যাডভার্টাইজিং