দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট (আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি) হিসেবে পরিচিত সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ারের প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও পরিবেশ এবং প্রতিবেশগত ক্ষতি রোধ করতে হাওরের ওয়াচ টাওয়ার ও এর আশেপাশে হাউজবোট চলাচল বন্ধের নির্দেশনা জারি করেছে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন।রবিবার (২২ জুন) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করীম এ নির্দেশনা জারি করেন।জানা যায়, সম্প্রতি সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটক অনেক বেড়েছে। পর্যটকদের নিয়ে হাউজবোট, ট্রলার সরাসরি ওয়াচ-টাওয়ারের গিয়ে এর পাশে হিজল, করচের বাগানে অবাধে ঘুরাফেরা করা, ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে যত্রতত্র চলাচল করায় মাছের অভয়াশ্রমের ক্ষতি করা, বড় বড় হাউজবোটগুলো হিজল ও করচ গাছের সঙ্গে বেঁধে গাছের ক্ষতি করা ছাড়াও পর্যটকদের ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ্য হাওরের মারাত্মক ক্ষতি করছে। সেইসঙ্গে হাওরে উচ্চস্বরে গান বাজানোসহ নানা অভিযোগ পাওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই নির্দেশনা জারি করা হয়।
সুনামগঞ্জ পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাশমির রেজা জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমরা টাঙ্গুয়ার হাওরের জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় প্রশাসনকে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলে আসছি। আজকে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এটিকে সাধুবাদ জানাই। তবে টাঙ্গুয়ার হাওরের মূল সৌন্দর্য ওয়াচ টাওয়ার এলাকা। সেখানে পর্যটকেরা কীভাবে যাবেন তাও নির্দেশনায় বলা দরকার। সেইসঙ্গে স্থানীয়দের এখানে যুক্ত করার দাবি জানিয়েছি। স্থানীয়দের জীবিকা ঠিক রাখতে তাদের ছোট নৌকা, হাত দিয়ে চালাতে পারে এমন নৌকা বানাতে সরকারকে তাদের পাশে থাকা দরকার বলেও মনে করি।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও চলতি দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করীম জানান, পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা রেজোয়ানা হাসানের নির্দেশে সুনামগঞ্জের জীব-বৈচিত্রর আধার টাঙ্গুয়ার হাওরের জীব-বৈচিত্র রক্ষায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশনায় টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ টাওয়ার ও এর আশেপাশের এলাকা হাউজবোট চলাচলেরর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশনা জারি থাকবে।